BUET-Reports/anonymous-report

Git Reports Issue

BUET-Reports opened this issue · 0 comments

Submitter: 14 Batch Ragging
Email: noibeddo@buet.com
(টর্চারের শিকার পাশের বিশ্ববিদ্যালয়ের, ঘটনা গত বছরের বিজয় দিবসের আগ মুহূর্তে এবং এই লেখাটা তারই,সত্যমিথ্যা প্রমাণ করার দায়িত্ব নির্যাতক হিসেবে যাদের নাম আসছে,তাদের,আশা করবো তারা এখানে এসে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করে যাবে নইলে ওই ছেলের কাছে ওর ক্যাম্পাসে গিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবে যদিও এদেরকে বিচারের আওতায় আনা বুয়েট প্রশাসনের দায়িত্ব )
বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে কুইজ কম্পিটিশনে পার্টিসিপেশন শেষে চলে যাওয়ার জন্য ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে উবার বাইকে উঠতে যাবো। বাইকওয়ালা দাঁড়িয়ে আছে, এমন সময় সেখান এসে আমাকে ডাক দেয় নাসিম ইমন (কেমিকৌশল' ১৪) আর অভিষেক মুহুরী (কেমিকৌশল' ১৪)। নাসিম ইমন নটরডেমে আমার ক্লাসমেট ছিল। বলল, উবার ক্যান্সেল কর। তোর সাথে কথা আছে। এরপর ক্যাফের পাশে ডেকে নিয়ে যায়। এর মধ্যে আরও বেশ কয়েকজন জড়ো হয়ে যায় সেখানে। যাদের মধ্যে মুহতাসিম ফুয়াদ, শোয়েভ আহমেদ জয়, আসিফ ইসতিয়াক, মিলন সাহা, অনিক ব্যানার্জি, পরাগ কান্তি সরকার, ঝলক,*** এরা ছিল। সবাই বুয়েটের ১৪ ব্যাচের পোলাপান। আমার নিজের ব্যাচ। যার মধ্যে আবার আমার নটরডেমের সহপাঠী পর্যন্ত আছে। মুহতাসিম ফুয়াদ হুট করে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। তারপর বলে, ওকে বাইকে তোল। শেরে বাংলা হল এ নিয়ে চল। তখন রাত ৮ টার মতো বাজে। শেরে বাংলা হল এর গেস্ট রুমে নিয়ে প্রায় ঘন্টাখানেক আটকে রাখে। আমাকে রেখে রুমে তালা দিয়ে তারা আবার চলে যায় অডিটরিয়ামে যেখানে ছাএলীগের অনুষ্ঠান চলছে। কয়েকজনকে রেখে যায় তালাবদ্ধ রুম পাহারা দেয়ার জন্য। ৯ টার দিকে অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরে আসে তারা। তারপর শুরু হয় তাদের টর্চার আর জিজ্ঞাসাবাদ। প্রায় ১৮-২০ জন মিলে বেধড়ক পিটায় ৩ ঘন্টা ধরে। উল্লেখ্য তারা প্রায় সবাই আমার ফ্রেন্ডলিস্টে ছিল ফেসবুকে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আমার সক্রিয়তা, পোস্ট/স্ট্যাটাস ইত্যাদির কথা উল্লেখ করে বলে, তুই তো শিবির, বুয়েটে কী করস? বুয়েটের কাদেরকে চিনোস? এই বলে শুরুতেই আসিফ ইসতিয়াক সজোরে কানের উপরে চড় মারে একটা। তারপর দুইদিক থেকে কিল, ঘুষি, লাথি শুরু করে অন্যান্যরা। আমি দুই হাত দিয়ে কান, মাথা ঢেকে শুধু চিৎকারই করছিলাম, আমি কোনো রাজনীতি করি না, কাউকে চিনি না।
আমার মোবাইল তন্ব তন্ব করে খুঁজে কিছু না পেয়ে হোয়াটস্যাপ থেকে আমার ফ্রেন্ডকে নিজেরা মেসেজ সেন্ড করে তার স্ক্রিনশট নিয়ে আমাকে দেখায়ে বলে, এই দেখ প্রমাণ, তুই শিবির।
আমি দাবী করি, এই মেসেজ আমি পাঠাইনি। সময় দেখলে সহজেই বোঝা যায়। টাইমসহ সেই মেসেজের স্ক্রিনশট ছিল পরবর্তীতেও।
যাইহোক, এর মাঝে রুমের মধ্যে স্ট্যাম্প, লোহার পাইপ হাতে ঢুকতে দেখি কয়েকজনকে। তারপরের অবস্থা বর্ণনাযোগ্য না। আমার দুই হাত আর দুই পা দুইদিকে টেনে রাখে দুইজন। অপর আরেকজন স্ট্যাম্প দিয়ে হাত আর পায়ের হাড়ে অমানবিক ভাবে পেটাতে থাকে। আর চারদিক থেকে উল্টাপাল্টা কিল, ঘুষি আর লাথি তো ছিলই। এক পর্যায়ে আমার শার্ট ছিড়ে যায়, চোখের কোণে কেটে রক্ত বের হতে থাকে, প্যান্ট খুলে আসে হাটুর কাছে, শুধু আন্ডারওয়্যার পরা অবস্থায় বেহুশের মতো শ্বাস নিচ্ছিলাম। তারা ক্ষান্ত দিয়ে আমাকে ধরে বসায়। কিছু বিরতি দিয়ে আবার শুরু করে পিটানো।
সেদিন আবার আমি ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বিকালে বুয়েটে এসেছিলাম কুইজে অংশ নিতে। সারাদিন কিছু খাইনি। তাদের কাছে একটু পানি খাওয়ার জন্য কাতরাচ্ছিলাম। ওরা ধমকে ওঠে, তোর কিছুই হয়নি, সব নাটক করতেছিস। একে একে নাম বল সবার। বলে আবার স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানো শুরু হয়। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিলো, বাঁচবো না আর আজকে। হাত দিয়ে মুখ, মাথা সেভ করার প্রচেষ্টাও ছেড়ে দিই। এক চোখ ফুলে গেছে। রক্ত বের হচ্ছে। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। শুধু কপাল অনেক ভালো ছিল যে, রড আনার পরেও তারা সেটা ইউজ করে নাই। না হলে ততক্ষণে দুই পায়ের হাড় ভাঙা থাকার কথা। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে পেটানোর পর রাত ১২ টার দিকে তারা আমাকে পুলিশ ডেকে তুলে দেয়। এই সময়ের মধ্যে খবর পেয়ে আমার ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাকে উদ্ধার করার জন্য আসে কয়েকজন। পরবর্তীতে জানতে পারি ঢাবি বুয়েট গণ্ডগোল লেগে যাওয়ার ভয়ে তারা দ্রুতই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। অন্যথায় আমি বুয়েটের কেউ হলে রাতভর নির্যাতন চলতো হয়ত।
যাইহোক, সেদিন এই নারকীয় নির্যাতনে যারা অংশ নিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল চেনা মুখ।
পরবর্তীতে তাদের প্রায় সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের সহ সভাপতি অথবা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইত্যাদি বড় বড় পোস্ট পেয়েছে। ১৪ ব্যাচের এইসব পটেনশিয়াল খুনিরা এরপর আবার মিথ্যাচার করে নিজেদের কাজকে যাস্টিফাইও করেছে। আমার চেনামুখের মধ্যে সেদিন এই বর্বতায় অংশ নিয়েছিল--
১। নাসিম ইমন- কেমিকৌশল ১৪- আহসান উল্লাহ হল (নটরডেমে আমার ক্লাসমেট)- ছাত্রলীগ সহ সভাপতি
২। অভিষেক মুহুরি- কেমিকৌশল ১৪- আহসান উল্লাহ হল- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
৩। শোয়েভ আহমেদ জয়- ১৪ ব্যাচ- আহসান উল্লাহ হল- সহ সভাপতি
৪। মুহতাসিম ফুয়াদ- পুরকৌশল ১৪- শেরে বাংলা হল- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
৫। মেহেদী হাসান রাসেল- ১৩ ব্যাচ- সাধারণ সম্পাদক
৬। অনিক ব্যানার্জি- ইউআরপি ১৪- সহ সভাপতি
৭। পরাগ কান্তি সরকার- কেমিকৌশ ১৪- আহসান উল্লাহ হল- সহ সভাপতি (নটর ডেমে আমার গ্রুপমেট)
৮। মিলন সাহা- ইউআরপি ১৪- সহ সভাপতি
৯। আসিফ ইসতিয়াক- মেক্যানিক্যাল ১৪- সহ সভাপতি
১০। মিনহাজুল ইসলাম- ১৪ ব্যাচ- সহ সভাপতি
১১। সাজিদ মাহমুদ অয়ন- মেকানিক্যাল ১৪- সহ সভাপতি
১২। রাউফুন রাজন ঝলক- ১৪ ব্যাচ- রশিদ হল- সহ সভাপতি
১৩। নাফিউল আলম ফুজি- সিএসই ১৪- সহ সভাপতি
১৪। আল মুইন শাহরিয়ার- সিভিল/মেকানিক্যাল ১৪- সহ সভাপতি (এনডিসি গ্রুপমেট)
১৫। মুন্তাসির মুনেম প্রান্ত- ১৪ ব্যাচ- সহ সভাপতি
১৬। তৌফিক উর রহমান- ১৪ ব্যাচ - সহ সভাপতি
এরা সহ আরও কয়েকজন ছিল।
নির্যাতকদের কয়েকজন প্রোফাইলের লিংক আর কিছু ছবি দেয়া হলোঃ
https://www.facebook.com/radsharar.shuvro
https://www.facebook.com/muhtasim.fuad.125
https://www.facebook.com/profile.php?id=100005952702912
https://www.facebook.com/nafiulalam.fuji
https://www.facebook.com/profile.php?id=100005952702912